রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার কুড়িবিশ্বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুর ১২টার সময় ম্যানেজিং কমিটির জরুরি বৈঠকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

এ সময় কুড়িবিশ্বা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস রুমে উপস্থিত ছিলেন- আলী ইলহাম সরকার লীমু, সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন বকুল, সদস্য লিটন মিয়া, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক, অভিভাবক মকবুল হোসেন, নাজমুল মিয়া, আব্দুল মতিন, মিলন মিয়া প্রমুখ।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন বকুল বলেন, ঘটনার পরের দিন লোকমুখে ও সদস্য লিটনের মাধ্যমে ওই ঘটনার খবর শুনতে পাই। জনগণের নানা কথাবার্তা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ১৯ জুলাই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লীমু ও সদস্য লিটনের সঙ্গে আলোচনা করে জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

জানা যায়, বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বিদ্যালয় থেকে বাইরে যান শিক্ষক ফজলুল হক। স্কুলের সামনে বটগাছের নিচে ঝালমুড়ির দোকানের কাছে দেখা মেলে বিদ্যালয়ের পাশের বাড়ির এক নারীর। শিক্ষককে দেখে ওই মহিলা সালাম দেন। পরক্ষণেই শিক্ষক ওই নারীকে ঝালমুড়ি খেতে বলেন। ঝালমুড়ি নিলে ওই নারীর কাছে পান খাওয়ার আবদার করেন ফজলুল হক। পরে পান নিতে গেলে পেছন পেছন বাসায় ঢুকে একা পেয়ে ওই নারীকে জোর করে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণচেষ্টা করেন।

ওই নারী কোনোরকমে পালিয়ে পাশের বাসায় গিয়ে বিষয়টি জানান। তখন ওই বিষয়টি বিদ্যালয়ের এক মহিলা শিক্ষকের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষককে অবহিত করা হয়। পরে বিষয়টি তার স্বামী শুনে লাঠি নিয়ে ওই শিক্ষককে স্কুলেই মারতে যান। তখন প্রধান শিক্ষক অনুরোধ করেন ও আশ্বাস দেন যে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই শিক্ষককে বদলি করা হবে। তারপর বিষয়টি থামে।

এদিকে ম্যানেজিং কমিটির জরুরি বৈঠকে শিক্ষক ফজলুল হক তার সব দোষ স্বীকার করে সবার কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। কমিটির বৈঠকে শিক্ষার্থী অভিভাবক আরও এক ভুক্তভোগী বলেন, কিছুদিন আগে আমার স্ত্রীকেও এই লম্পট শিক্ষক কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমার স্ত্রী আমাকে জানালে আমি স্কুলে এসে শিক্ষক ফজলুল হককে জিজ্ঞেস করি।

সঙ্গে সঙ্গে তিনি আমার হাত ধরে মাফ চান। তাই বিষয়টি বাড়াবাড়ি করিনি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আতিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জেনেছি, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।

এ বিষয়ে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলী ইলহাম সরকার লীমু বলেন, বিষয়টি শোনার পর সহ-সভাপতি বকুল, প্রধান শিক্ষক আতিকুলসহ আমরা ওই নারীর কাছে গিয়েছিলাম। ধর্ষণচেষ্টা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এএম শাহজাহান সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। অভিযোগ পেলেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গংগাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল হোসেন বলেন, বিষয়টি ঘৃণিত। অভিযোগ পেলেই ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।